ছোটোবেলা থেকেই আমরা মোটামুটি কয়েন এর সাথে পরিচিত। বিশেষ করে আমরা যারা ৯০'র দশকে এবং এর আগে জন্মেছি, তারা সবারই রয়েছে কয়েন এর সাথে সখ্যতা।
হ্যা, এর পিছনে রয়েছে কয়েকটি বিশেষ কারণ।
প্রথমত, আগে টাকার মান ছিল অনেক বেশি, অল্প টাকাতে পাওয়া যেত অনেক কিছু। আর কয়েন এর প্রচলন ও ছিল এখনকার চেয়ে অনেকাংশে বেশি। এ জন্য আমাদের বাবা-মা রা হাতে ১ টাকার একটি কয়েন ধরিয়ে দিলেই আমরা অনেক খুশি হয়ে যেতাম।
শুধু নিজের জন্যই নয়, খরচ করতে পারতাম বন্ধুদের জন্যও।
তবে সে কথা বলতে আজ আসিনি।
আজ বলতে চাই ব্রিটিশ আমলের কয়েন এর কথা, যেগুলো ব্যবহৃত হতো পণ্য কেনা-বেঁচাতে—এই বাংলার মাটিতেই।

আমার জন্ম যশোরে, এক শহরতলিতে। শুনেছি, আমাদের বাড়ির অনতিদূরেই ছিল বিশাল ঘাট, যেখানে আসত বড়-বড় জাহাজ। চলতো লেনাদেনা।
আবার, খুব কাছেই নাকি ছিল বিশাল নীলকুঠি। ব্রিটিশরা তাদের নীলের চাহিদা মেটাতো এসব নীলকুঠি থেকেই।
যাহোক, বলছিলাম কয়েন এর কথা, ব্রিটিশ কয়েন।
এখনও পর্যন্ত, একটু ভারী বৃষ্টি হলেই পাওয়া যায় সেসব কয়েন। বৃষ্টির পানিতে নদীকূলবর্তী এলকার মাটি ধুয়ে যেতে থাকলে ভেসে ওঠে নানা ধরণের কয়েন।
ছবিতে যে কয়েনগুলো দেখতে পাচ্ছেন, তার অধিকাংশই ব্রিটিশ কয়েন—ওই নদীঘাটবর্তী জায়গা থেকেই কুড়িয়ে পাওয়া। এর মধ্যে অনেক গুলো আছে যা ১৮ শতকের। অর্থাৎ, ১৭০১-১৭৯৯ সালের মধ্যবর্তী সময়ে তৈরী। কিছু বাংলাদেশী কয়েনও আছে এখানে।
দেখে মনে হয় পিতল অথবা দস্তার।
অনেক দিন ধরে রেখেছি নিজের সংগ্রহে। শুনেছি এগুলোর নাকি অনেক দাম।
বিক্রি হয় নাকি কালো বাজারেও।
তবে আমি ইন্টারনেট ঘেটে যা বুঝলাম, সব কয়েন এর সমান মূল্য না, আর, নিজে না বুঝলে আপনি ঠকে যাবেন নিচ্চিত।
আসলে কয়েন গুলো সংগ্রহ করেছে আমার এক আত্মীয়, ছোট বয়স, খেলার ছলে কুড়িয়েছে।
তার নাকি আরো অনেক কয়েন ছিল এক সময়। একদিন কিছু লোক এসে তার কাছ থেকে সব গুলো নিয়ে যায় অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে। তার পরের সংগ্রহগুলো এখন আমার জিম্মায়।
রেখে দিয়েছি পরম যত্নে, ছোটবেলায় আলিফ লায়লায় দেখেছিলাম মোহর আদান-প্রদান হতো বিশেষ এক ধরণের ঝুলিতে।
আমার সামর্থ্য নেই সেই ঝুলি সংগ্রহ করার, তবে, কাছাকাছি দেখতে একটি ঝুলি পেয়েছি, নিউমার্কেট থেকে সানগ্লাস কেনার সময়।

রেখে দিয়েছি সেই ঝুলিতেই, মোহর ভেবে সুখ নিই মাঝে মাঝে।