[image](https://www.pexels.com/photo/orange-mason-jar-in-body-of-water-462030/)
![pexels-photo-462030.jpeg](https://images.hive.blog/DQmTzScApnnXRqsumnzQbxU4EEy9TFodEjyVBV6K6dQqW6j/pexels-photo-462030.jpeg)
তিথি মাত্র এসএসসি পরীক্ষা দিল। পরিবারের পাঁচ সদস্যের মধ্যে সে ছিল সবার ছোট। দেখতে এখনো সেই ছোটদের মতই। কথায় কথায় অযথা হাসতে খুব পছন্দ করে। ছোটদের মতোই সারা ঘরে আনন্দ ছড়িয়ে বেড়ায় সে। শ্যাম বর্ণের তিথি চুলগুলো তার বেশ লম্বা। তিথির জীবনে রং ছড়িয়ে আছে চারিদিকে। তিথি রঙিন রঙিন স্বপ্ন দেখতে প্রতিদিন পছন্দ করে। নিজের মধ্যেই তার স্বপ্নের দুনিয়ায় রয়েছে। এর বাইরে জীবনে যে কখনো খারাপ কিছু হতে পারে সেটা তার ভাবা হয়নি এখনো। কানন পরিবারের সদস্য গুলো থেকে মানুষের ভালো গুন জীবনে দেখে এসেছে। পরিবারের ছোট মেয়ে হিসেবে তিথি বেশ আদরের।
পরিবারের সদস্যরা তিথিকে প্রায়ই বলে তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। আজ তিথির এসএসসি রেজাল্ট দিবে। তিথির বড় ভাই তো তিথিকে আগেই বলেছে যদি এস এস সি তে এ প্লাস নিয়ে আসতে পারে তাহলে যা চাবে তাই পাবে। কিন্তু তার সেই দিকে কোনো মাথাব্যথা নেই। এরমধ্যে দুপুর বারোটার আগেই তিথির বান্ধবী ফোন করে বলল। কোথায় তুই এখনও ঘুমোচ্ছিস নাকি তাড়াতাড়ি স্কুলে আয় ভালো একটা খবর আছে। তিথি বান্ধবীর কথা শুনতে কোনরকম রেডি হয়ে চলে গেল স্কুলে। স্কুলে নাকি আগেই খবর চলে এসেছে সে এ প্লাস পেয়েছে সাথে তিথির প্রিয় বান্ধবী টাও নাকি পেয়েছে।
কিন্তু এখনো তিথি নিশ্চিতভাবে জানে না যার কারণে পরিবারের কাউকে আর ফোন দিয়ে বলল না। বারোটার পর যখন রেজাল্ট দিল তখন তিথি জানতে পারলো যে সত্যিই সে এ প্লাস পেয়েছে। শোনার সাথে সাথেই তিথি ফোন দিয়ে আগে তার পরিবারকে জানালো। পরিবারের সবাই তো শুনে বেশ খুশী। কিছুক্ষণ এর মধ্যেই বাড়ি ফিরে গেল তিথি। গিয়ে দেখল বাসায় অনেক মিষ্টি নিয়ে এসেছে তিথির বাবা আর ভাই। ঘরে ঢুকতেই খুব বড় মুখ করে বললো তোমরা তো আমায় কিছু মনেই করো না। এখন দেখলে তো এই তিথি কত ভালো রেজাল্ট করল। তিথির মাতো বেশ খুশি আজকে। তার ছোট মেয়েটা এত ভাল রেজাল্ট করবে সেটা তো বুঝতেই পারেনি যার কারণে একটু বেশি খুশি।
আর এখন সে সবাইকে বলতে পারবে তিথি এ প্লাস পেয়েছে। রেজাল্টের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মিষ্টি এনে প্রতিবেশী সবাইকে দেওয়া হল। আদুরে মেয়েটা যেন রেজাল্টের পর আরও বেশি আদরে হয়ে উঠলো। এখন তিথি ভাবতে লাগলো এসএসসি রেজাল্ট তো হয়ে গেল কিন্তু কলেজে তো সরকারি তে ভর্তি হতে হবে। প্রাইভেটে পড়ার মতো কোন সামর্থ্যই তার পরিবারের হবে না। আর পরিবারের সবাই যখন ইঞ্জিনিয়ার তাকে তো সেখানেই পড়া উচিত। কিছুদিনের মধ্যেই কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় চলে আসল। এসএসসির সময় তিথি ভয় না পেলেও এখন সে একটু ভয় পাচ্ছে কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে। কিছুদিনের মধ্যেই কলেজে ভর্তি হওয়ার পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল।
তিথিও প্রথমবারের মতো পলিটেকনিকে ভর্তি পরীক্ষা দিল। পরীক্ষা দিয়ে শেষ করে তিথি যখন বাড়ি ফিরে তখন তার মা খেয়াল করল তিথির মনটা তেমন একটা ভাল না। তখন তিথি কে জিজ্ঞেস করল কিরে তোর পরীক্ষা কেমন হল কিছু তো বললি না। তিথি মুখটা শুকনো করে বলল পরীক্ষা ভালো হয়নি মনে হচ্ছে টিকবো না মনে হয়। তিথির মা কোন কিছু না বলেই চলে গেল। এরমধ্যে তো তিথির বোন একটু সুযোগ পেলো আর অমনিতেই কথা শোনানো শুরু করে দিল। বলতে থাকলো এ প্লাস পেলেই হবে কলেজে ভর্তি হওয়া অনেক কঠিন এখন দেখা যাবে তুই কতটা পড়াশোনা করেছিস। পরীক্ষার পরে সপ্তাহের মধ্যেই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করল। কিন্তু তিথির রোল আসলো না। তিথি এখন একটু সত্যিই ভয় পেয়েছে। কারণ সকালে শিফটে তার ভর্তি হওয়া হলো না। এখন শুধু আরেকটা অপশন তার জন্য তাও বাকি আছে। সে চেষ্টা করলো বিকেলে শিফটে ভর্তি হওয়ার জন্য।
তাই আগে থেকেই খুব ভাল ভাবে প্রিপারেশন নেওয়া শুরু করল। বিকাল শিফট এর পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল কিছুদিনের মধ্যেই। তিথির বিকাল শিফট পরীক্ষা দিলো এবং সে আশানুরূপ একটা পরীক্ষা দিয়েছে। এবং তিথির তখন মনে হয়েছে সে এবার মনে হয় তার পছন্দের কলেজ টা তে ভর্তি হয়ে যাবে। এক সপ্তাহের মধ্যেই হঠাৎ করেই পরিবারের মোবাইলে তার রেজাল্টের মেসেজ চলে আসলো। এবং সত্যি সত্যিই দেখল তিথি খুব ভালো কলেজে সুযোগ পেয়ে গেছে। তিথির আনন্দের শেষ নেই সেই দিন। কারণ এখন আর অন্তত টাকার ব্যাপারটা ভাবতে হবে না। সময় করে তিথি নিজের মাকে নিয়ে গিয়ে কলেজে ভর্তি হয়ে আসলো।
এবং কলেজের ব্যাপারে সবকিছু জেনে আসলো কবে থেকে কলেজে ক্লাস শুরু হবে। শুরু হতে যাচ্ছে জীবনের নতুন একটি অধ্যায়। স্কুল থেকে কলেজে ওঠার আনন্দটাই অনেক। যেটা তিথি সবসময় নিজের মধ্যে এ কলেজ মেয়ে অনেক ভাবনা ভেবেছে। অবশেষে তার ভাবনার অবসান ঘটল এবং তার পছন্দমতো কলেজে ভর্তি হতে পারল। হাজারো স্বপ্নের সাথে তিথি নতুন কলেজে পদার্পণ করল।
___TO BE CONTINUED